আজ ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

অবশেষে সীলগালা করা হলো সেই অনুমোদনহীন হাসপাতালটি

শহর প্রতিনিধি: ফেনীতে অনুমোদনহীন আল মদিনা হাসপাতাল অ্যান্ড স্পেশালাইজড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালিয়ে সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। রবিবার (১১ জুন) জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের উদ্যোগে ফেনী শহরের দাউদপুর এলাকার ওই হাসপাতালে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়।

হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিতে আসা এক শিশুর মৃত্যুর পর ভুল চিকিৎসার অভিযোগ উঠলে এ অভিযান পরিচালনা করে স্বাস্থ্য বিভাগ।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুবল চাকমা হাসপাতালটি সিলগালা করেন। এ সময় জেলা সিভিল সার্জনের পক্ষে চিকিৎসা কর্মকর্তা (এমও) আশিকুদ্দোলা, ফেনী সদর উপজেলার স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষে ছিলেন চিকিৎসা কর্মকর্তা (এমও) যোবায়ের ইবনে খায়ের।

ওসমান গনি নামের এক শিশুকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালটিতে। ভুল চিকিৎসায় শিশু মৃত্যুর অভিযোগ তুলে স্বজনেরা কর্তব্যরত চিকিৎসককে অবরুদ্ধ করেন। খবর পেয়ে ফেনী মডেল থানা–পুলিশ সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

ওসমান গনি সদর উপজেলার মধ্যম ফরহাদনগরের আলাউদ্দিন হুজুর বাড়ির সাইফুল ইসলাম ও আসমা আক্তারের ছেলে।

সাইফুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ‘শনিবার দুপুর ১২টার দিকে আমার ছেলের হার্নিয়ার অস্ত্রোপচার করানোর জন্য ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক সার্জন ডা. আদনান আহমেদের পরামর্শে আল মদিনা হাসপাতালে ভর্তি করি। ছেলেকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়ার ১০ মিনিট পর নার্সদের আচরণ দেখে সন্দেহ হয়। মূলত অপারেশন করার জন্য অ্যানেসথেসিয়া ইনজেকশন দেওয়ার পর আমার ছেলে আর চোখ খোলেনি।’

শিশুটির স্বজনদের অভিযোগ, সন্ধ্যা ৬টায় অস্ত্রোপচার করার কথা থাকলে অপারেশন থিয়েটারে তাকে নেওয়া হয় বেলা ৩টায়। বিকাল ৪টার দিকে শিশুটির মৃত্যু হয়।

তাদের অভিযোগ, অ্যানেসথেসিয়া দেওয়ার ৬ ঘণ্টা আগে মূলত রোগীকে খালি পেটে রাখতে হয়। এখানে শিশুটির বিষয়ে তড়িঘড়ি করে ৬ ঘণ্টা আগে অপারেশন করার কারণে মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে উদ্বোধনের আগেই হাসপাতালে শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয়রা জানান, হাসপাতালটি ১০ বেডের জন্য আবেদন করলেও এখানে ১৯ শয্যার হাসপাতাল চালু করেছে মালিকপক্ষ।

হাসপাতালটির চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম জানান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে হাসপাতালের অনুমোদনের জন্য আবেদন করা হয়েছে। তবে এখনও অনুমোদন মেলেনি।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এস এম মাসুদ রানা বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতকে তারা কোনও কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। অনুমোদনহীন হাসপাতালটি পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।

সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এস এম মাসুদ রানা জানান, শনিবার সন্ধ্যায় ওই হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় একটি শিশু মারা যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। জেলা ও উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আজ একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছে। এ সময় দেখা যায় হাসপাতালের অভ্যন্তরে অস্ত্রোপচারকক্ষ (ওটি), প্যাথলজি ও ওয়ার্ডে নানা অনিয়ম এবং অব্যবস্থাপনা বিদ্যমান। এরপর সেখানে ভর্তি থাকা রোগীদের ফেনী সদর জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করে হাসপাতালটি সিলগালা করা হয়।

     এই ক্যাটাগরির অন্যান্য নিউজ